শিশুদের সাইবার অপরাধ সামাজিক মাধ্যমে পর্ণগ্রাফির উদ্বেগজনক প্রভাব যা সমাজের সর্বস্তরেই পরিব্যাপ্ত তা নিয়ে রাজ্যসভার অ্যাডহক কমিটির সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে ইলেক্ট্রনিক্স…

শিশুদের সাইবার অপরাধ
শিশুদের ওপর সামাজিক মাধ্যমে পর্ণগ্রাফির উদ্বেগজনক প্রভাব যা সমাজের সর্বস্তরেই পরিব্যাপ্ত তা নিয়ে রাজ্যসভার অ্যাডহক কমিটির সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতে ইলেক্ট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক (এমইআইটিওয়াই) থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সরকার তথ্যপ্রযুক্তি (অন্তরবর্তী নির্দেশিকা এবং ডিজিটাল মাধ্যম এথিক্স কোড)আইন ২০২১ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-
১. সময় বেঁধে অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি করতে মধ্যস্থতাকারীদের অভিযোগ প্রতিকারে সক্রিয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক এবং আইন সঙ্গত নয় এই জাতীয় কোনো রকম তথ্য প্রকাশ, পরিবেশন, সম্প্রচার বা সে জাতীয় চিত্র বা তথ্যের আপলোড বা তার পুনর্বিন্যাসে বাধা দিতে মধ্যস্থতাকারীদেরকে বিভিন্ন শর্তাবলী প্রদান করতে হবে।
৩. এই জাতীয় তথ্য বা চিত্র যেসব জায়গা থেকে প্রথম উদ্ভুত হচ্ছে তা চিহ্নিত করে ম্যাসেজ মারফত সামাজিক মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারীদেরকে জানাতে বলা হয়েছে।
৪. শিশু যৌন নির্যাতনমূলক উপাদানগুলিকে চিহ্নিত করতে সামাজিক মাধ্যমের মধ্যস্থতাকারীদেরকে উপযুক্ত প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো তৈরির ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই সাইবার অপরাধ যা বিশেষত শিশুদের যুক্ত করছে তা প্রতিরোধে সার্বিক এবং সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তথ্য সুরক্ষা শিক্ষা এবং সচেতনতা (আইএসইএ) ব্যবস্থা নিতে এমইআইটিওয়াই সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। নীতি-নির্দেশিকা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো রকম বিকৃত তথ্য বা ভুয়ো খবর যাতে পরিবেশন না করা হয় তার উল্লেখ করা হয়েছে। তথ্য সুরক্ষা সচেতনতামূলক একটি ওয়েবসাইট (https://www.infosecawareness.in) এ ব্যাপারে যাবতীয় প্রাসঙ্গিক তথ্য পরিবেশন করবে।
শিশুদের যৌন নির্যাতন থেকে সুরক্ষিত রাখতে (পসকো)আইন ২০১২কে ২০১৯ সালে সংশোধন করা হয়েছে। এতে শাস্তি আরও অনেক বেশি কঠোর করার সংস্থান রাখা হয়েছে। এই সংশোধনে শিশু পর্ণচিত্রের সংজ্ঞাকে ২(ডিএ) ধারায় রাখা হয়েছে। এই আইনের ১৪ নম্বর ধারাকে সংশোধন করে শিশুদেরকে পর্ণ ক্ষেত্রে ব্যবহারের শাস্তি কঠোর করা হয়েছে। এছাড়াও ১৫ ধারার সংশোধনে ফলে পর্ণচিত্র সংক্রান্ত উপাদান সামগ্রী যাতে শিশুদের যুক্ত করা হচ্ছে তার মজুত এবং ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এগুলির ক্ষেত্রে আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশে সুনির্দিষ্ট সময় ছাড়া অন্য কোন সময় প্রচার এবং প্রসারের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
পসকো আইন ২০২০তে বলা হয়েছে এক্ষেত্রে যাবতীয় সচেতনতামূলক প্রচার বিজ্ঞপ্তি পঞ্চায়েত ভবন, কমিনিউটি সেন্টার, স্কুল-কলেজ, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, জনবহুল এলাকা, বিমানবন্দর, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, সিনেমা হল সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে দিতে হবে এছাড়াও ভার্চুয়াল মাধ্যম, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মাধ্যমেও তার প্রচার করতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও শিশু এবং মহিলাদের সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ (সিসিপিডাব্লুসি)একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২১৩.১৯ কোটি টাকার নির্ভয়া তহবিলের অধীন এই প্রকল্প। এতে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সাইবার ফরেন্সিক এবং প্রশিক্ষণ ল্যাবোরেটরি তৈরিতে অর্থ প্রদান, জুনিয়ার সাইবার কনসালটেন্ট নিয়োগ এবং ল-এনফোর্সমেন্ট এজেন্সিগুলির তদন্তকারী, প্রসিকিউটার এবং জুডিশিয়াল অফিসার নিয়োগের অর্থ সাহায্য প্রদান করা হবে। ২৮টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই সাইবার ফরেন্সিক ট্রেনিং ল্যাবোরেটরি তৈরি করেছে এবং ১৯ হাজারেরও বেশি পুলিশকর্মী, প্রসিকিউটার এবং জুডিশিয়াল অফিসার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
রাজ্যসভায় আজ এক লিখিত জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশ কল্যাণ মন্ত্রী শ্রীমতী স্মৃতি যুবিন ইরানী।